অমিঃ কিছু কিছু মানুষ পৃথিবীতে আসে শুধুমাত্র “দুই নম্বর” হওয়ার জন্য। আমি সেরকম একজন মানুষ। আর কিছু কিছু মানুষ সারাজীবন এক নম্বর হয়ে থাকে,
সেরকমই একজন হলো “তপা”।
ঋতুঃ কীভাবে?
অমিঃ প্রথম থেকে বলি,
শোন…
ঋতুঃ হ্যা বল, সবটা বল।
অমিঃ শোন,
তপা ওর বাবা মায়ের বড় মেয়ে,
আমি আমার বাবা মায়ের দ্বিতীয় ছেলে। সেই থেকে ওর এক নম্বর আর আমার দুই নম্বর হওয়া শুরু। আমরা একই ক্লাসে পড়তাম। ও ছিল ফার্স্ট আর আমি সেকেন্ড। সবসময় তাই ছিল। ফাইভে, ও ট্যলেন্টপুলে বৃত্তি পেল, আমি পেলাম সেকেন্ড গ্রেডে। এইটেও তাই। সবসময় তাই।
ঋতুঃ ও আচ্ছা, পড়াশোনায় এরকমতো হতেই পারে।
অমিঃ উহু,
শুধু পড়াশোনায় না। আমরা দুজনই গান গেতাম। কিন্তু আমি কোন কম্পিটিশনে কোনদিন ফার্স্ট হতে পারিনি। সবসময় সেকেন্ড হয়েছি। আর ও সবসময় ফার্স্ট হয়েছে, কোনদিন সেকেন্ড হয়নি।
ঋতুঃ ভালো,
আর কিছু?
অমিঃ আমরা দুজন, একসাথে বিতর্ক প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়েছি। ও সবসময় দলনেতা, আর আমি দ্বিতীয় বক্তা। জেতার পরে কাপটা সবসময় ও হাতে নিত। কিন্তু, আমার অবদান কেউ মনে রাখত না। অথচ দলনেতা হওয়ার যোগ্যতা যে আমার ছিল না,
তা কিন্তু নয়।
ঋতুঃ বাব্বা্, অনেক অভিযোগ দেখছি, আর আছে?
অমিঃ পিছু ছাড়েনি আমার,
আরো শুনবি? একই সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলাম। আমার অবদান ওর চেয়ে কোন
অংশে কম ছিল না। অথচ ওকে করা হলো সভাপতি আর আমাকে করা হলো সহসভাপতি। আর আমি মেনেও
নিলাম বিনা বাক্য ব্যয়ে।
ঋতুঃ প্রতিবাদ করতিস…সমস্যা কি ছিল?
অমিঃ প্রতিবাদ করে কি করব?
আমারতো জন্মই হয়েছে দুই নম্বর হওয়ার জন্য!
নিশাদঃ হমম…মনে হচ্ছে, আরো কোন ব্যপার আছে। বলতো, আর কোথায় কোথায় তুই দুই নম্বর হয়েছিস !!
অমিঃ আমি ওর সাথে বাজি ধরেছিলাম, ক্যম্পাসে ওর আগে প্রেম করে দেখাব। আর, ও আমাকে চ্যলেঞ্জ করেছিল, ও আমার আগে প্রেম করবে।
ঋতুঃ নিশ্চয় পারিসনি?
অমিঃ পারিনি। তবে প্রেম করেছি পরে।
ঋতুঃ পরে মানে, ওর পরে?
অমিঃ মানে,
ওর ব্রেকআপ হওয়ার পরে
ওর মানসিক অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়।আর আমি তখন ওকে মেন্টাল সাপোর্ট দিতে শুরু
করলাম। আর তারপর, একসময় আমি নিজেই ওর প্রেমে পড়ে গেলাম। ও রাজি হয়ে
গেল এক কথায়! প্রেমও করলাম আমরা। হয়তো আমার সারা জীবনের সমস্ত রাগ,
হিংসা, ক্ষোভ রূপ নিয়েছিল ভালবাসায়।
ঋতুঃ খুবি ভাল কথা। কিন্তু এর সাথে দুই নম্বরের সম্পর্ক কি তাতো বুজলাম না!
অমিঃ সম্পর্ক এই যে, ও আমার প্রথম প্রেম। মানে, ও ঠিকই এক নম্বরের জায়গাটা ধরে রাখল,
আমার লাইফে প্রথমে এসে আর আমি যথারিতী দুই নম্বর,
ওর লাইফে !!
ঋতুঃ ওয়াও…তারপর?
অমিঃ যখন বুঝতে পারলাম, এখানেও আমি
দুই নম্বর, তখন আর সহ্য করতে পারিনি। পুরোন সব রাগ, হিংসা,ক্ষোভ আবার জেগে উঠল মনের মাঝে। ওকে বললাম, এক নম্বর আর দুই নম্বর কখনো এক সাথে থাকতে পারে না। এক নম্বর থাকে এক নম্বরের সাথে আর দুই নম্বর থাকবে দুই নম্বরের সাথে।
ঋতুঃ মানে?
আবার ব্রেকআপ?
অমিঃ হ্যা,
ব্রেকআপ। এবং মেকআপ।
ঋতুঃ সে আবার কী?
অমিঃ মানে ওকে আমি মিলিয়ে দিলাম ওর এক নাম্বারের সাথে। ও এক নম্বর, এক নম্বরের সাথেই থাকুক!
নিশাদঃ আর তুই?
রবিঃ আমি অপেক্ষায় আাছি আমার দুই নম্বরের.........
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন