বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০১৪

ছেলে হয়ে মেয়ের মত লেখার চেষ্টা !!

প্রিয় রোল নাম্বার ৩৪,
আচ্ছা, তুমি কেমন ছেলে?? এক সেকেন্ড কি স্থির হয়ে বসে থাকতে পার না? অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, আমি তোমাকে আজ পর্যন্ত একটিবারের জন্যও চুপ করে বসে থাকতে দেখিনি! আমি জানি, তুমি যথেষ্ট গুণী একটা ছেলে। সেদিন মাঠে দেখলাম খেলছিলে। বিশ ওভারের খেলা। তুমি নেমেছিলে ওপেন করতে। মাত্র সাত ওভার মাঠে থাকলে। সাত ওভারে দলের রান পচাত্তর। তুমি একাই করলে বায়াণ্ণ! এটা কি ধরণের খেলা? কেন বিশটা ওভার কি মাঠে থেকে খেলে আসা যেতো না? কি লাভ হলো ওরকম খেলে? না মানে, আমি বলছিলাম, তুমি আরেকটু বেশি সময় মাঠে থাকলে আরেকটু বেশি সময় নিয়ে তোমাকে, মানে তোমার খেলাটা দেখতে পারতাম!
এই যে কথাটা বললাম, মনে কি একটুও দোলা লাগলো? মনেতো হয় না! শোণ, তুমি আমি সমবয়েসী। কিন্তু, মানসিকভাবে আমি তোমার চেয়ে অনেক এগিয়ে। কেন জান? কারন আমি মেয়ে আর তুমি ছেলে। আজ পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অনেক ছেলেই আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছে। আমি কিন্তু, এসবে মোটেই সারা দেইনি। আমার কিছু মনেই হয় না এসবে। অবশ্য তুমিতো আর এসবের খোঁজ রাখ না। কেন রাখবে? তুমিতো আছ তোমার যতসব বন্ধুগুলোকে নিয়ে। কি এক গ্রুপ তোমার! একজনও যদি একটু কাজের হয়! সবকটাই কেমন গর্ধব গর্ধব। এই রে! তোমার বধুদের নিন্দা করেছি বলে রেগে যাচ্ছ না তো? তুমিতো আবার বিরাট বন্ধুবৎসল ছেলে! রাগ করলে করো। তুমি কি মনে কর? তোমার এই বন্ধুগুলো তোমার মত? মোটেই না! তুমি মেয়েদের সাথে না মিশলে কি হবে? তোমার বন্ধুরা যথেষ্ট বান্ধবীবৎসল! সবাই নিজের পথটা বেশ দেখে নিচ্ছে
আর তুমি গাধাটা, গাধাই থেকে গেলে!
আবার রাগ করছো? গাধা বলবো নাতো কি বলবো তোমাকে? সারাক্ষণতো শুধু লাফানোর উপরেই আছ! সেদিন ক্লাসে দেখলাম, পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে, হেঁটে হেঁটে পড়ছিলে। হাটাঁতো নয়, যেন দৌড়! পড়ালেখা কেউ লাফিয়ে লাফিয়ে করে? তোমার খাওয়া আমি দেখিনি অবশ্য। আচ্ছা, তুমি মনে হয় খাওয়াদাওয়া করার সময়ও লাফাও, তাই না?
শোন, একটু চোখ মেলে আশেপাশে দেখ। যথেষ্ট বড় হয়েছো। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়। লাফানোর বয়স আছে তোমার? দেখো, প্রেম আমিও করিনা। তাই বলে তোমার মত ছটফট করে বেড়াই না সবসময়। আচ্ছা,  আজকের যুগের কোণ মেয়েটা প্রেম করে না বলতে পার? আমাদের ক্লাসের মেয়েদের দিকে তাকিয়ে একবার দেখোতো! একটু খোঁজ নিলেই দেখবে; সবাই প্রেম করে। ওহ! স্যরি; তোমারতো আবার অত খোঁজ নেয়ার সময়ই নেই। তুমিতো হচ্ছো, এই পৃথিবীর ব্যস্ততম প্রাণী!
যাইহোক, তোমার খোঁজ নেয়ার দরকার নেইআমি বলছি, এটাই যথেষ্ট। তোমাকে যেটা বলছি সেটা শোণ। তুমি একটা প্রেম করো। তোমার ভালর জন্যই বলছি। তোমার লাফালাফিটা একটু কমানো দরকার। প্রেম করলে তোমার মাঝে কিছুটা স্থিরতা আসবে বোধ করিঅবশ্য প্রেম করতে তুমি পারবে বলেওতো মনে হয় না! আচ্ছা; প্রেম করো আর না করো, বিয়েতো করবে? তোমাকে যে মেয়ে বিয়ে করবে সে মেয়ের কপালে যে কি আছে! আমারতো সে বেচারীর জন্য করুণাই হচ্ছে!
শোণ, আবারও বলছি; প্রেম করো একটা। আমি তোমাকে প্রেম করা শিখিয়ে দেব। না না, প্রেম আমিও করিনি। তাই বলে, তোমার চেয়ে ভাল পারবো, এটুকু নিশ্চিত!
এতকিছু বললাম, আসলে কি বলতে চাচ্ছি তা যদি না বোঝ, তাহলে আমার আর কিচ্ছু করার নেই। একটা মেয়ে হয়ে তোমাকে চিঠি লিখছি, এটা তোমার সাত জন্মের ভাগ্য! ধ্যুর, তুমি কিচ্ছুই বোঝ না। আচ্ছা, মানুষটা যেহেতু তুমি, তাই তোমার মগজের দিকে লক্ষ্য রেখে আরেকটু বলছি; তুমি ছেলেটা একটু বেশি লাফালেও, একেবারে মন্দ নও। আর কারোর কেমন লাগে জানিনা। তবে, আমার কিন্তু তোমাকে বেশ লাগে!
এইরে! অনেক বেশি বলে ফেললাম! আর একটুও বলবো না। এরপরও কিছু না বুঝলে তোমার আর বোঝার দরকার নেই। লাফিয়ে লাফিয়েই তোমার দিন কাটুক।

                                                                                                               ইতি
তোমার ঠিক পরের রোল নাম্বার যার

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন