সোমবার, ৩০ জুন, ২০১৪

নাথিং ইজ আনফেয়ার ইন লাভ

মিশু ছেলেটা, ছেলে হিসেবে কিন্তু খারাপ না খুব শান্ত প্রকৃতির খুনের হুমকি দিলেও মিথ্যা কথা বলে না মেয়েদের দিকে ভুলেও তাকায় না যেকোন ধরনের অন্যায় থেকে সদা একশ দূরে তার অবস্থান আর মেয়েদের ব্যাপারে? ভুলেও মেয়েদের ব্যাপারে কোন কিছু ভাবে না সেজীবনে মাত্র একবার টিভিতে একটা মেয়ের নাচ দেখে খুব ভালো লেগেছিল ইচ্ছে হয়েছিল মেয়েটাকে একবার দেখার ওই পর্যন্তই তবে, সব কিছু মিলে আপাদস্তক সৎ একটা ছেলে
    কিন্তু বেশি সৎ মানুষদের জীবনে ঝামেলা অনেক ব্যপারটা খুলেই বলি আমাদের এই মিশু যাচ্ছিল বাড়িতে দিনাজপুর থেকে রাজশাহী অনেকটা রাস্তা বাসে উঠতেই সিট নিয়ে ঝামালায় পড়তে হলো বাসে একটাই সিট খালি আছে, কিন্তু ওই সিটের পাশের সিটে বসেছে একটা মেয়ে তার পাশে ওকে সিট দেয় কীভাবে? মিশুর ঝামেলা দেখে মেয়েটাই জানালো তার কোন আপত্তি নেই ভীষন অস্বস্তি নিয়ে মেয়েটার পাশে বসল মিশু জীবনে এমন ঘটনা এই প্রথম! ওর অতিরিক্ত অস্বস্তি দেখে মেয়েটাই ওর সাথে কথা বলা শুরু করলঃ
মেয়েটাঃ কোথায় যাচ্ছেন ?
মিশুঃ রাজশাহী
মেয়েটাঃ ওহ তাই? আমিওতো
মিশুঃ আপনার বাসা কি রাজশাহী?(বুকে প্রচন্ড সাহস সঞ্চয় করে বল)
মেয়েটাঃ নাহ আমি রাজশাহী সিটি কলেজে পড়ি আপনার বাসা মনে হয় রাজশাহী?
মিশুঃ হুমরাজশাহী শহরেই কিছু যদি মনে না করেন একটা কথা বলতাম
মেয়েটাঃ বলেন(মনে হলো মেয়েটা কিছুটা বিরক্ত হলো)
মিশুঃ আপনাকে কোথায় যেন দেখেছি মনে হচ্ছে
মেয়েটাঃ আমারতো সেরকম কিছু মনে হচ্ছে না(এবারে মনে হলো সে কিছুটা মজা পেল)
মিশুঃ কিন্তু, আমি সিও আপনাকে দেখেছিআচ্ছা, আপনার নামটা বলবেন?(অস্থির হয়ে)
মেয়েটাঃ তমা
এবারে মিশু যেন ভাষা হারিয়ে ফেলল মুখে তার আর কোন কথা নেই নিজেকে ধরে রাখতে কষ্ট হচ্ছে কোনকমে বলল, “এবার আপনাকে চিনতে পেরেছি
 
তমাঃ চিনেছেন? কীভাবে? কোথায় দেখছেন আমাকে?
মিশুঃ টিভিতে দুই বছর আগে বিটিভিতে একটা নাচের অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথেরআমার অঙ্গে অঙ্গে কে বাজায় বাঁশিএই গানটার সাথে অসাধারন লেগেছিল
   কথাটা বলেই বোধহয় একটু লজ্জা পেল মিশু উচ্ছাস বেশি দেখিয়ে ফেলেছে!
তমা এবার বেশ লজ্জা পেল ওই একবার মাত্র সে টিভিতে পারফর্ম করেছিল তারপর আর কোনদিন ডাক পায়নি কিন্তু খুব ভালো লাগলো ছেলেটার কথা শুনে এই প্রথম দেখলো যে, ওই প্রোগ্রামটা ওর পরিচিতজ ছাড়াও কেউ দেখছে!
  মিশু সব জড়তা ভুলে কথা বলতে শুরু করলো সারা রাস্তা চলল ওদের গল্প মেয়েটার সাথে যোগাযোগ রাখার খুব ইচ্ছে হলো, কিন্তু কীভাবে? সরাসরি একটা মেয়ের কাছে তার মোবাইল নাম্বার কীভাবে চাইবে ? এদিকে মেয়েটারও নামার সময় হয়ে এল কিছু একটাতো করা দরকার
 শেষমেষ একটা প্রতারণার আশ্রয় নিতে লো তমা বাস থেকে নামার ঠিক আগের মুহূর্তে বলল, কিছু যদি মনে না করেন, আমার একটা উপকার করতে পারেন?”
তমাঃ কী? বলেননা ?
মিশুঃ আমার কাছে না, একদ টাকা নেই মানি ব্যাগ ফেলে এসেছিলামতো আপনি কি আমার মোবাইলে ৫০ টাকা ফ্লেক্সিলোড করে দিতে পারেন? আমি কাল সকালেই আপনাকে দিয়ে দেব
তমাঃ ওকে কোন ব্যপার না আপনার নাম্বারটা দিন আর এইটা আমার নাম্বার
মিশু নাম্বা দিল নিজের টাকা পেয়ে একবার জানালো নিজে তমার নাম্বারে টাকা দিয়ে আবার খোঁজ নিল টাকা পেয়েছে কিনা মাঝে মাঝেই কথা হতে লাগলো ওদের তবে, তমাই ফোন করে বেশি
    শেষ খবর এই যে, অতি ভদ্র ছেলে মিশু শেষ পর্যন্ত হাবুডুবু খেয়েছে তমার প্রেমে তবে, আরো মজার ব্যপার, তমাই প্রোপজ করেছে মিশুকে প্রেম হওয়ার পর মিশু স্বীকার করেছে, সেদিনের মোবাইলে টাকা না থাকার কথাটা আসলে মিথ্যা ছিল ওটা ছিল নাম্বার নেয়ার জন্য দেয়া একটা টোপ তমা বলেছে সে বেশ ভালোই বুঝতে পেরেছে সেটা উলটো সে নাকি মনে মনে চাচ্ছিল এরকম কিছু একটা হোক আর এতে সে মিশুকে একটুও ভুল বোঝেনি কারন, “Nothing is unfair in love” !!!!!

           

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন